\\ ... ধলপ্রহরের চিঠি ... //


ঘড়ির কাঁটায় ১:৪৬
২১/১১/২০১৩

এই যে খড়-কুটো পড়ে আছে এগুলো কে তোলে? লেখার কাগজ উড়ে গেছে আর কিছুই নাই তো… তাই আসি না। তুমি রাগ কর গাছ? পাতা? মেঘ? ঘাস? ডাকবাক্স? তোমরা কি ভাবতে জানো বলো তো? তোমাদের নিয়েও তো গল্প বটে … ঘুণপোকা আর ঘাসফড়িঙদের গল্প …!

তোমরা সবাই আমাকে লেখো তবে… লেখো কয়টা চিঠি ছিল কোটরে… লিখো এই যে বসে আছি অনেক রাতে খোলা মাঠে পাকুড় গাছটার পাশে… কে দেখে? কে ডাকে? ডাকিনী-যোগিনী? ব্যঙমা-ব্যঙমী?
শীতের রাতে ঘোরে-বেঘোরে নিমাই পাগলা হাঁক ছাড়ে ঘর ছেড়ে পালাতে পালাতে … পাড়ার কুকুরীটা ছাড়া তো নিমাইদাকে কেউ দেখে না কোনদিন… কুকুরীটা সাথে সাথে থাকে… রাতভর… দিনভর… ওরে কেউ জিজ্ঞেস করেছো বলো তো… নিমাইদার মাঝে ও কী পায়? কী দেখে? নিমাইদা মাঝে মাঝে তেড়ে আসে… কেবল অস্পষ্টে মাঝে মাঝে বলি – এক টুকরো রুটি তুমি তারে দিও নিমাইদা… শীতের রাতে মাঝে মাঝে নাহয় ওম দিও…

আমারও ঘোর-বেঘোর ভালো লাগে… খানিকটা জ্বর ঘোর! পাকুড় গাছ আর মাঠ পেরিয়ে যে পোড়ো-বাড়ি ধলপাড়ার … সেখানটায় একটা রাত কাটাতে ভালো লাগে… খড়-কুটো কিঞ্চিৎ তোমার এই মাঠ থেকেই কুড়িয়ে নিলাম… রাতভর ধ্যানে বসলে না কী শব্দেরা বেড়াতে আসে সেই বাড়িতে…

নিমাইদা তুমি বুঝি তাই কবুতর-চড়ুই-কুকুর আর কাক-শালিখের ভাষা বুঝতে পারো… পাকুড় গাছের ভাষা বোঝার খেলাটাও তুমি শিখে নিও নিমাইদা … একলা একা বাঁচতে হলে অনেক খেলায় ডুবতে ডুবতে ভাসতে ভাসতে হারিয়ে যাওয়ার থাকে … জ্বরে-অজ্বরে … কোথাও খুব গোপনে যা - তাকে লুকিয়ে রাখতেও তো জানতে হয় বলো…
পাকুড় গাছের ভাষাটা তুমি শিখিয়ে দিও নিমাইদা … আমি তোমায় ডাকবাক্স আর জাদুকরের ভাষা খানিকটা বুঝিয়ে দিবো নাহয়… যতটা বিদ্যে আমার! কিঞ্চিৎ যতটা যোগ্যতাতে ধরতে পেরেছিলেম!!

মন্তব্যসমূহ

সর্বাধিক পঠিত [Popular Post]